মরসুম শেষের ম্যাচ রিপোর্ট এইভাবে লিখতে হবে আশা করিনি। মরসুমের অনেক ম্যাচ খারাপ খেলেছে মোহনবাগান, তার মধ্যে কিছু ম্যাচ ড্র করেছে, হেরেছে কিন্তু এইভাবে আত্মসমর্পণ কোনোদিন হয়নি। একটা সাফল্যের মরসুমে ত্রিমুকুট জয়ের হাতছানি তে সাড়া দিয়েও অর্জন করতে না পারার কষ্ট মোহনবাগানীদের অনেক দিন কুড়ে কুড়ে খাবে।কোনও দ্বিমতের জায়গা নেই যে বহুদিন পর একটি দল মোহনবাগানকে ৯০ মিনিটের অধিকাংশ সময়ই আউটপ্লে করে দিয়েছে। এমনকি যে ম্যাচগুলোয় ৪-১, ৫-২ হেরেছি সেই ম্যাচগুলোও এরকম আত্মসমর্পণ করিনি।
প্রথমার্ধে কামিংসের গোল একমাত্র বলার মতো মুহূর্ত মোহনবাগানের। লিস্টনের থেকে বল পেয়ে দিমির সুইং মেশানো শটের নিটফল যেন উড়িষ্যা ম্যাচের রিপ্লে। গোলের পর আবার ওই ষাট হাজারি গর্জনে যে মুম্বাইয়ের কেঁপে যাওয়ার কথা উল্টে তারাই স্নায়ু ঠান্ডা করে নামল। বলতে বাধ্য হচ্ছি যে হাবাসের ধারালো বুদ্ধির জোরে মোহনবাগান আইএসএল শিল্ড জিতেছিল আজ তার ভুলেই কাপ হাতছাড়া করলো। পিটার ক্র্যাটকির স্ট্র্যাটেজি ছিল চেজ, স্ন্যাচ এন্ড কিল! সেই কাজ প্রায় সফল হতে হতেও পাশা উল্টে গিয়েছিল, কিন্তু দ্রোনাচার্যের আজকের একলব্য থাপাকে স্যাক্রিফাইস করে সব গুবলেট করে দিলেন। আজ মাঝমাঠের একমাত্র পজিটিভ খেলোয়াড়কে কেন বসতে হবে? দিশেহারা কাউকোকেও যদি রাখতে হয় তাহলে তার পাশে অভিষেককে নামিয়ে ব্যালেন্স করার চেষ্টা না করে দীপককে রেখে দিয়ে অত আগে সাহালকে কেন নামানো হলো? আজ মোহনবাগানের দুই উইং পুরোপুরি নিষ্প্রভ ছিল, বিশেষত ডান দিক। জনি কাউকো সত্যিই আর পুরো ৯০ মিনিট খেলার জায়গায় নেই, এদিকে শুরু থেকেই তার ছন্দ হারিয়ে ফেলেছিলেন। কেনই বা মনবীরকে বহু আগে বসানো গেল না? আজ ফ্লপ মনবীর দুবার স্রেফ কভার করে নেওয়ার অকারণ আত্মবিশ্বাস দেখাতে গিয়ে দুটো গোল হজম করালেন? আজ কেন কাউকোর জায়গায় আনোয়ার এসে, ওর জায়গায় হ্যামিল এলো না? আজকের পরাজয় মোহনবাগানের বর্তমান দলের অনেক ফাঁকফোকর দেখিয়ে দিয়ে গেলো, যা ঢাকার জন্যে ম্যানেজমেন্ট কে শুরু থেকেই কাজ করতে হবে। নাহলে এশিয়া পর্যায়ের ম্যাচ গুলোতে আজকের ম্যাচের পুনরাবৃত্তি হবেই।